সুনামকণ্ঠের প্রতি শুভ কামনা
- আপলোড সময় : ০১-০১-২০২৫ ০১:১০:১৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০১-০১-২০২৫ ০১:১০:১৪ পূর্বাহ্ন
প্রফেসর দিলীপ কুমার মজুমদার
সুনামগঞ্জের সাংবাদিকতার জগতে উজ্জ্বল নক্ষত্র আমাদের বিজন সেন রায়। যাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা করি তার নিরলস কর্মতৎপরতা এবং বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য। তিনি একজন নির্ভীক হিসাবে দীর্ঘদিন সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। সুনামগঞ্জের সাংবাদিকতায় ইতিহাসে স্মরণীয় অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি অত্যন্ত পেশাদারিত্ব ও খুবই সাহসিকতা এবং বিশ্বস্ততার সহিত তার দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে এক অনন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। আমার বিশ্বাস তার নিরবচ্ছিন্ন কর্মকা- নতুন সাংবাদিকদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে কাজ করবে। তিনি সুনামকণ্ঠ পত্রিকাটি সাপ্তাহিক হিসেবে শুরু করেছিলেন ২০০১ সালে। একান্ত নিরলস চেষ্টায় তার পেশা তখন নেশায় রূপান্তরিত হয়েছিল। বর্তমানে পত্রিকাটি দৈনিক পত্রিকা হিসেবে সুনামগঞ্জবাসীর কাছে সমাদৃত। সাপ্তাহিক থেকে দৈনিক পত্রিকার রূপান্তরের পথচলা এতটা সহজ ছিল না। সেই কৃতিত্ব পত্রিকাটির সংশ্লিষ্ট সকলের থাকলেও মূল কারিগর ছিলেন সম্পাদক ও প্রকাশক বিজন সেন রায়। বর্তমানে দৈনিক পত্রিকা হিসেবে খুব দায়িত্বশীলতার সহিত পেশাদারিত্ব বজায় রেখে একদল সাংবাদিকদের অসাধারণ প্রচেষ্টায় হাওর-বাওরের জেলা সুনামগঞ্জের আঞ্চলিক খবরা-খবর তথা দেশ ও বহির-বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে পাঠকদের মনোজগতে বেশ সারা জাগিয়েছে দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকাটি।
আমি মনে করি সুনামকণ্ঠ পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে একজন সফল ব্যক্তি বিজন সেন রায়। একজন সাংবাদিক হিসেবে উনার অভিজ্ঞতার গভীরতা তুলনাহীন। আমি যখন সুনামগঞ্জ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করি আজ থেকে ১৭ বছর পূর্বে, তখন থেকে বিজন সেন-এর কাছাকাছি আসার সুযোগ হয়। তিনি তখন মহিলা কলেজের ছাত্রীদের নিয়ে ‘সুনামকণ্ঠ পাঠক ফোরাম’ তৈরি করে ছাত্রীদের মধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল মহৎ এবং সৃষ্টিশীল। তিনি চেয়েছেন ছাত্রীদের মধ্যে পত্রিকা পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করতে। এতে করে তাদের জ্ঞানের তথ্য ভা-ার বিকাশিত হবে, নেতৃত্বের চরিত্র উন্মোচিত হবে। ভবিষ্যতে সুনাগরিক হয়ে তারা দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখার যোগ্যতা অর্জন করবে। পত্রিকা পড়ার পাশাপাশি এ ধরনের কর্মকা- তখন ছাত্রীদের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল।
সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজকে ডিগ্রিতে উত্তীর্ণ করার জন্য মহিলা কলেজের ছাত্রীদের নিয়ে বিজন সেন রায় ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন এটা স্বীকার করতেই হয়। মহিলা কলেজকে ডিগ্রিতে উত্তীর্ণ করতে বিজন সেনের অবদান অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিজন সেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা-েও নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন দুর্যোগ প্রাকৃতিক বা মানব সৃষ্ট হোক, তিনি তার পত্রিকা সুনামকণ্ঠের মাধ্যমে মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। বিশেষ করে বন্যার সময় ত্রাণসামগ্রী এবং শীতের সময় প্রশাসনের ব্যক্তিদের সহযোগিতা নিয়ে গরিব-মেহনতী মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন। এসব সমাজসেবামূলক কাজ তার পেশাদারিত্বের সাথে নেশায় রূপান্তরিত হয়েছে।
ঘরে নির্জন বসে অলস সময় কাটানোর ব্যক্তি নন তিনি। সব সময় কাজের মধ্যে ডুবে থাকা তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তিনি বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব পালনের মধ্যে দিয়ে নিজের গ্রহণ যোগ্যতা সম্মান বৃদ্ধি করেছেন তেমনি পত্রিকাটি ও জনমানুষের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বিনিময়ে মানুষের অনেক ভালোবাসাও পেয়েছেন বিজন সেন রায়। সুনামগঞ্জের আঞ্চলিক সমস্যার উপর বিভিন্ন তথ্য বা প্রতিবেদন পরিবেশনের মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টি করেছেন এবং বহুলাংশে সমস্যা সমাধানে সফলতাও এনে দিয়েছেন।
আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি থেকে বলতে দ্বিধা নেই- বিজন সেন রায় সাংবাদিকতায় যেমন একজন সফল ব্যক্তি, ঠিক তেমনি নিবেদিত সামাজিক কর্মকা-েও একজন উদাহরণ সৃষ্টিকারী সফল ব্যক্তি।
দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকাটির ১১ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে এটা অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের। সুনামগঞ্জ একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের জেলা শহর। এহেন জেলায় একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করা এবং ধারাবাহিকতা রক্ষা করা অত্যন্ত কঠিন এবং অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবুও সম্পাদক মহোদয় এ কাজটি সফলতার সহিত করতে পেরেছেন এবং পত্রিকাটির সরবরাহ বাজারে সমুন্নত রেখেছেন। আমি পত্রিকাটি সম্পাদক ও প্রকাশক বিজন সেন রায়সহ সকল কলাকৌশলী এবং পত্রিকার সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিবর্গকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। পত্রিকাটি ভবিষ্যতে যেন আরও বৃহৎ পরিসরে পরিবেশনের জানান দিয়ে সফলতা অর্জন করতে পারে এই শুভ কামনা করি।
সত্যি বলতে কি প্রতিদিন সকালে আমার প্রথম কাজটিই হল মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকার খবরগুলো দেখা। সিলেটে বসে সুনামগঞ্জের খবরা-খবর অতি সহজে যখন পেয়ে যাই, তখন খুব ভালো লাগে। ঠিক তখনই মনে হয় আমি যেন সুনামগঞ্জেই আছি। সুনামকণ্ঠ দিয়ে আমার দিনটি শুরু হয় এটা বহু দিনের অভ্যাস। তারপর অন্যান্য পছন্দ মতো পত্রিকা এবং মোবাইলে অন্যান্য খবর পড়ি। পরিশেষে আমি দৃঢ় চিত্তে পত্রিকাটির সার্বিক সফলতা ও সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি।
[লেখক: প্রফেসর দিলীপ কুমার মজুমদার, সাবেক অধ্যক্ষ, সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ]
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ